
জুসে বিষ মিশিয়ে দাদীর বিরুদ্ধে
নাতিকে হত্যার অভিযোগ
মোঃ জালাল উদ্দিন, গুরুদাসপুরঃ
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ইকরী গ্রামে দুই বছরের শিশু নুর ইসলামকে জুসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দাদি সকেনা বেগম (৪০) এর বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত দাদী গুরুদাসপুর উপজেলার সোনাবাজু গ্রামের মোতালেব হোসেনের স্ত্রী। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ ৪টার দিকে ঘটে এ ঘটনা।
এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুই বছরের শিশুটিকে দেখতে শত শত মানুষ জমায়েত হয় ওই বাড়িতে। শিশু নুর ইসলামের মা জান্নাতুল (১৮) অভিযোগ করে বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে শাকিল হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
আরো পড়ুনঃ
গজারিয়া বাসচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু ! মহাসড়ক অবরোধ-বাস ভাংচুর
বিয়ের সময় ২ লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছেন তার বাবা-মা। বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি সকেনা বেগম বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। বিয়ের দেড় বছর পর সন্তান জন্ম নেওয়ার পর নির্যাতন আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। নিরুপায় হয়ে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়ি বড়াইগ্রামের রোলফা গ্রামে বসবাস শুরু করেন।
শনিবার ইকরী গ্রামে তার এক আত্মীয়র বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন। দুপুরে তার অনুপস্থিতির সুযোগে শাশুড়ি সকেনা বেগম শিশুকে জুস খাওয়ান।
এরপর শিশুটি হঠাৎ বমি করতে থাকে। দ্রুত বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শিশুটি বিষাক্ত কিছু পান করেছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শাশুড়ির কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন মা জান্নাতুলসহ এলাকাবাসী। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সকেনা বেগম বলেন, তিনি নিজেও একই জুস খেয়েছেন এবং তার মেয়ের কন্যা সন্তানকেও খাইয়েছেন। নাতির মৃত্যু তাকে মর্মাহত করেছে। তিনি বিষ মেশাননি বলে জানান।
বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুস সালাম বলেন, “শিশুটিকে হাসপাতালে আনার সময়ই কীটনাশক জাতীয় বিষ পানের আলামত পাওয়া যায়। শিশুটির মুখ থেকে বিষের গন্ধও আসছিলো।
দ্রুত রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হলেও পথেই তার মৃত্যু হয়।” বড়াইগ্রাম থানার ওসি মো. গোলাম সারওয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে নাটোর মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন শেষে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।