কুষ্টিয়ায় কিল-ঘুষিতে গাড়িচালকের মৃত্যু-প্রতিবাদে মানববন্ধন

আইন আদালত খুলনা জাতীয় দুর্ঘটনা সারাদেশ
শেয়ার করুন....,

কুষ্টিয়ায় কিল-ঘুষিতে গাড়িচালকের মৃত্যু- প্রতিবাদে মানববন্ধন  

হৃদয় রায়হান, কুষ্টিয়াঃ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার গাড়িচালক শহিদুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামিকে ঘটনার ১৪ দিন পরও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্তেও নেই কোনো অগ্রগতি।

এসবের প্রতিবাদে এবং দ্রুত আসামি গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় কুমারখালী পৌরসভার সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনের আয়োজন করেন এলাকাবাসী। এতে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।

পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ফারজানা আখতারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।

স্মারকলিপিতে অন্তত ৪৮৪ জন মানুষের স্বাক্ষর রয়েছে।

জানা যায়, কুমারখালী পৌরসভায় বর্তমানে ৫৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। তাদের ৪২ মাসের বকেয়া মজুরি—মোট প্রায় ১০ কোটি টাকা—এখনো পরিশোধ হয়নি।

বকেয়া বেতনের দাবিতে ১৯ নভেম্বর সকালে শহিদুল ইসলাম পৌরসভার বিভিন্ন দফতরের কক্ষের দরজা বন্ধ করতে থাকেন।

এ সময় সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলামের কক্ষ বন্ধ করতে গেলে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে কিল-ঘুষি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঘটনার পর কর্মচারীরা ফিরোজুলকে ১১৫ এবং শহিদুলকে ১১৬ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। কিছুক্ষণ পর সহকর্মীরা শহিদুলকে কক্ষের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন।

সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও স্বজনরা ফিরোজুলের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। সেদিন রাতেই শহিদুলের মেয়ে সুবর্ণা খাতুন বাদী হয়ে ফিরোজুলের নামে হত্যা মামলা করেন।

মামলায় আরও দুই থেকে তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মামলার বাদী সুবর্ণা খাতুন বলেন, বেতন চাইতে গেলে সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলাম বাবাকে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে কক্ষে আটকে রাখে। ওই নির্যাতনের কারণেই বাবার মৃত্যু হয়েছে। ১৪ দিনেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

নিহতের ছেলে মারুফ হোসেন বলেন, মামলায় কোনো তদন্ত অগ্রগতি নেই। তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৫ দিনের ছুটিতে আছেন। আমরা আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন শেষে ইউএনওর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আখতার বলেন, শহিদুল হত্যার বিচার চেয়ে স্বজন ও এলাকাবাসী স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। বিষয়টি বিধি অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকেই আসামি পলাতক।

তার ফোনও বন্ধ। তদন্তকারী কর্মকর্তা ছুটিতে থাকলেও আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


শেয়ার করুন....,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *