লালমাইতে ২ শিশুসহ পুত্রবধুকে ঘর থেকে বের করে তালা দিলেন শশুর

আইন আদালত কুমিল্লা চট্টগ্রাম জাতীয় সারাদেশ
শেয়ার করুন....,

লালমাইতে ২ শিশুসহ পুত্রবধুকে ঘর

থেকে বের করে তালা দিলেন শশুর

লালমাই প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের দক্ষিণ জয়কামতা (মান্দারি) গ্রামের মিয়াজী বাড়িতে দ্বিতীয় দফায় চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
মৃত মোঃ মাজহারুল ইসলামের স্ত্রী মোসাঃ মরিয়ম আক্তার রুমা (২৬) অভিযোগ করেছেন, তাঁর শ্বশুর মাষ্টার মোঃ আবদুল মালেক (৮০), ভাসুর আশিকুর রহমান মনির (৪৭), ভাসুরের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার (৩৫) ও শাশুড়ী আনোয়ারা বেগম (৬৫) মিলে তাঁকে মারধর, নির্যাতন করে দুই অবুঝ সন্তানসহ ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালা মেরে দেন।
ভুক্তভোগী মরিয়ম জানান, ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট মোঃ মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। বিয়ের পাঁচ বছর পর তাঁর স্বামী ২০২০ সালে সৌদি আরবে কাজে যান। পরে ২০২১ সালের ১ আগস্ট তিনি প্রবাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।
মরিয়মের ভাষ্য, স্বামীর মৃত্যুর তিন দিন পর তাঁকে খবর জানানো হয়। এরপর তাঁর অগোচরে শ্বশুর-শাশুড়ী ও ভাসুর সৌদি কোম্পানি থেকে পাওয়া ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেশে এনে আত্মসাৎ করেন।
এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, সর্দার, মাতব্বরসহ গ্রামবাসী সালিশ বৈঠকে শ্বশুর–শাশুড়ীকে ৪ লাখ, মরিয়মকে ২ লাখ, কন্যা মুনতাহাকে ৪ লাখ এবং ছেলে আবদুল্লাহকে ৫ লাখ টাকা ডিপোজিট দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু পরবর্তীতে শ্বশুর-পক্ষ সালিশের সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানায়। বরং তারা মরিয়মকে দুই সন্তানসহ ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মরিয়ম আরও জানান, সৌদি আরবের কোম্পানি তাঁর নামে ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে, যা তিনি তাঁর ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় জমি কিনে নিরাপদে রেখেছেন।
দুই পক্ষের মামলা ঘটনার পর মরিয়ম আক্তার রুমা বাদী হয়ে শ্বশুর মাষ্টার আব্দুল মালেক, ভাসুর আশিকুর রহমান মনির, ভাসুরের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার ও শাশুড়ী আনোয়ারা বেগমকে আসামি করে কুমিল্লা বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে, শাশুড়ী আনোয়ারা বেগমও পাল্টা মামলা করে মরিয়মকে আসামি করেছেন।
উভয় মামলাই বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।
ভুক্তভোগীর আকুতি,মরিয়ম আক্তার রুমা বলেন—“আমি দুই ছোট বাচ্চা নিয়ে কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। আদালত, লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার, লালমাই থানার ওসি, স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার—সবাইয়ের কাছে অনুরোধ করছি, যেন আমি বাচ্চাদের নিয়ে থাকার ব্যবস্থা পাই।
পাশাপাশি স্বামীর সৌদি থেকে প্রাপ্ত টাকা আমার ছেলে-মেয়ের নামে ডিপোজিট করার ব্যবস্থা করা হয়। স্বামীর পৈতৃক সম্পত্তিতে বাচ্চাদের ন্যায্য অধিকারও নিশ্চিত চাই।”

শেয়ার করুন....,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *