খাল কেটে কুমির এনেঃ বাড়ি এখন ভাঙ্গনের মুখে ! !

দুর্ঘটনা রংপুর সারাদেশ
শেয়ার করুন....,

খাল কেটে কুমির এনেঃ বাড়ি এখন ভাঙ্গনের মুখে !

মোঃ এনামুল হক বিপ্লব, কুড়িগ্রামঃ

খাল কেটে কুমির আনছে আর এখন বাড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছে,আক্ষেপ করে বললেন কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার নাজিম খান ইউনিয়নের সোমনারায়ণ মৌজার মিনতী রাণী।

সংবাদটুডে.কম প্রতিবেদকের প্রতিবেদনে এক করুণ পরিণতির চিত্র উঠে এসেছে।

যে খাল মানুষের জন্য আশির্বাদ বয়ে আনার কথা কিন্তু বাস্তবে সেই খাল আজ অভিশাপে পরিণত হয়েছে।

বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় ২০২৪/২০২৫ অর্থ বছরের ২৯০০ মিটার বুড়িতিস্তার খাল পুনঃখনন করা হয়।

নাজিমখান ইউনিয়নের সোমনারায়ণ মৌজা দিয়ে প্রবাহিত মূল তিস্তা নদীর তীর কেটে একই ইউনিয়নের বাছড়া ঈদগাহ মাঠের ব্রীজ পর্যন্ত ২৯০০ মিটার বুড়ি তিস্তা খাল খনন করেন রাজশাহীর কিড্স পার্ক নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যা গত জুন মাসে কাজটি শেষ হয়।

স্থানীয়দের আপত্তির মুখেও কাজ করা হয় বলে একাধিক সুত্র হতে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলে বুড়ি তিস্তার খালের মুখ দিয়ে হুহু করে পানি ঢুকে পড়ে এবং স্রোতের গতিবেগ এতোই প্রবল হয় যে ইতিমধ্যে ওই এলাকার মানুষজনের চলাচলের প্রধান সড়কের কয়েক টি স্থানে মাটি ধ্বসে পড়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

 

বুড়ি তিস্তার দুইপাড়ের মানুষের পাড়াপাড়ের জন্য একটি ব্রীজ ও একটি কাটের তৈরি শাকো ভেঙ্গে বুড়িতিস্তার সাথে মিশে গেছে।

বুড়িতিস্তার দুইপাড় ধ্বসে পড়ে ৫টি বাড়ির হুমকির মুখে পড়েছে।

যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না যায় তাহলে আরও ২০ থেকে ২৫ টি আধাপাকা ও ৫টি পাকা বাড়ি সহ মহসিনা দাখিল মাদ্রাসাও বুড়ি তিস্তার ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ধ্বসে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।

এছাড়াও সোমনারায়ন মৌজা নাজিমখান বাজারে যাওয়ার প্রধান সড়কের উপর নির্মিতব্য একটি ব্রীজের সামনের এক তৃতীয়াংশ ধ্বসে পড়েছে আপাতত ওই রাস্তা দিয়ে জনসাধারনের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

দোলা থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য খাল খনন করা হয় যাতে কৃষকেরা উপকৃত হন, পানিবন্দী হয়ে তাদের ফসল যেন নষ্ট না হয় কিন্তু হলো উল্টোটা উপকারের চেয়ে অপকারের বেশী হলো।

ওই মৌজার প্রভাত পিতা কমল,নিত্যানন্দ পিতা উপিন ডাক্তার,পলাশ পিতা রফিকুল,আলাল তৌসিলদার পিতা হোসেন মাস্টার, হাবিবুর রহমান পিতা আজিজার রহমান সহ আরও ২০ থেকে ২৫ টি বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে।

এখনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হলে মরা বুড়িতিস্তা রাক্ষুসী তিস্তায় পরিণত হবে।

হাবিবুর রহমান আক্ষেপের সুরে বলেন আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বরেন্দ্র ও পাউবি কে অবগত করেছি কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলো না। এই বুড়ি তিস্তা খনন কাজ পরিকল্পিতভাবে করা হয়নি। যদি দুপাশে ঢালাই করে করা হতো তাহলে এই পরিস্থিতি আজ হতো না।

কুড়িগ্রাম জেলার বরেন্দ্রের প্রকৌশলী আজাদুল ইসলামের কাছে বিষয় টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সংবাদটুডে.কম প্রতিবেদকের কাছে স্থানীয়দের আবেদনের কথা স্বীকার করে বলেন পাউবির প্রকৌশলীর সাথে তিনি কথা বলেছেন ওখানে জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ দিয়ে ব্যবস্থা নিয়ে যাতে করে বাড়ি কয়টি ভাঙন থেকে রক্ষা করা যায়।

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান প্রতিবেদক কে আশ্বস্ত করে বলেন ওখানে জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তবে স্থানীয় কর্তৃক যেন একটি লিখিত আবেদন পত্র দেওয়া হয়।

স্থানীয় নদী আন্দোলনের এক নেতার কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোনরূপ মন্তব্য করতে রাজি হননি।


শেয়ার করুন....,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *