
গৌরীপুরে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারী হত্যার
ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তি
মোঃ হুমায়ুন কবির, ময়মনসিংহ:
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হোসনে আরা খাতুন (৩৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া আসামি ফজলুল হক আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোছা. নাছিমা খাতুনের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি এ স্বীকারোক্তি দেন।
আদালতে ফজলুল হক বলেন, “কবিরাজ বাড়ি মসজিদের পাশে গভীর রাতে হোসনে আরা একা ঘোরাঘুরি করছিল। তাকে প্রশ্ন করায় সে ক্ষেপে যায় এবং আমাকে জুতা দিয়ে আঘাত করে।
এতে রাগ হয়ে আমি গলায় ধরলে সে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়।
এরপর কলাগাছের শুকনো ডাউগ্গা দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে হত্যা করি এবং লাশ ফেলে দেই কচুখেতে।”
পুলিশ জানায়, নিহত হোসনে আরার ব্যবহৃত জুতা ফজলুল হকের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত ৯ জুলাই তাকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
দুই দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গৌরীপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আবু হানিফ বলেন, “এটি একটি ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ড ছিল। ধাপে ধাপে তদন্তের মাধ্যমে রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে।”
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিদারুল ইসলাম জানান,“দ্রুত সময়ের মধ্যেই হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামি আদালতে দায় স্বীকার করলেও তদন্ত চলমান রয়েছে।”
নৃশংস ঘটনার পেছনের কাহিনি হোসনে আরা উপজেলার কবিরাজ বাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল গণির কন্যা। প্রায় ১০ বছর আগে তার বিয়ে হলেও এক বছরের মধ্যে মানসিক সমস্যার কারণে তিনি তালাকপ্রাপ্ত হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন।
২ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে মা রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন হোসনে আরা।
পরদিন সকালে তাকে পাওয়া না গেলে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গ্রামের মোশারফ হোসেন মজনুর কচুখেতে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
গলায় কলাগাছের শুকনো ডাউগ্গা প্যাঁচানো ছিল। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই শরীফ মিয়া ৩ জুলাই গৌরীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।