অষ্টগ্রামে সংস্কার অভাবে শত বছরের শ্মশানঘাট পরিত্যক্ত

অর্থনীতি জাতীয় রংপুর রাজনীতি সারাদেশ
শেয়ার করুন....,

অষ্টগ্রামে সংস্কার অভাবে শত

বছরের শ্মশানঘাট পরিত্যক্ত

শাহিন মিয়া, ‎অষ্টগ্রামঃ

‎সংস্কারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের সাপান্ত গ্রামের শতবর্ষী শ্মশানঘাট আজ পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে।

এক সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের একমাত্র দাহস্থল হিসেবে ব্যবহৃত এই শ্মশানঘাট এখন কালের সাক্ষী হয়ে অযত্ন-অবহেলায় জনমানবশূন্য। বাড়ছে আশেপাশের প্রায় এক হাজার পরিবারের দুশ্চিন্তা ও দুর্ভোগ।

‎স্থানীয়রা জানান, শ্মশানঘাটটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় মৃতদেহ দাহ করতে এখন দূর-দূরান্তের এলাকায় যেতে হয়। বিশেষ করে বর্ষায় দুর্ভোগ আরও বাড়ে।

মেঘনা নদীর তীরে গিয়ে দাহ কার্য সম্পন্ন করতে গিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের সমালোচনা, আপত্তি ও বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ‎

বৃহত্তর সাপান্ত গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তি পিযুষ চন্দ্র দাস সরেজমিনে সাংবাদিককে জানান, ‎আমাদের এই একটি শ্মশানঘাট ছাড়া আশেপাশে আর কোনো জায়গা নেই। দুর্ভাগ্য আমাদের ! প্রতিবারই দূর্গম এলাকা পাড়ি দিতে হয়।

এতে সময়, খরচ, কষ্ট সবই কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ‎

‎এ বিষয়ে কলমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাধাকৃষ্ণ দাস বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন এবং শ্মশানঘাটটি স্থায়ীকরণের জন্য এর চারপাশ পাকা করে মাটি ভরাট করা প্রয়োজন।

তিনি আরও জানান, ‎“আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েকবার মাটি ভরাটের ব্যবস্থা করেছিলাম, কিন্তু প্রতিরক্ষা দেয়াল না থাকায় বর্ষায় সব ভেসে যায়। স্থায়ী সমাধান ছাড়া কিছুই টেকসই নয়।” ‎

‎এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলশাদ জাহান জানান, তিনি শ্মশানঘাট নিয়ে একটি আবেদন পেয়ে ছিলেন এবং সরেজমিনে তদন্ত করে দ্রুত সংস্কার কাজের ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল, তবে বদলিজনিত কারণে তা আর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

‎ ‎অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মজনুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব না দেখানোর অভিযোগ উঠে এসেছে স্থানীয়দের মাঝে। তাদের দাবি, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এড়িয়ে চলছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

‎সাপান্ত শ্মশানঘাট ছাড়াও কলমা ইউনিয়নের গাজীরহাটি, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের বাজুকাগ্রাম এবং হিন্দু অধ্যুষিত খলাগাঁও জেলেপাড়ার শ্মশানঘাটগুলোও একই অবস্থার শিকার বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের দাবি, শত বছরের পুরাতন এই শ্মশানঘাটটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করা হোক। তাহলেই বহুদিনের ভোগান্তি কমবে, মরদেহ সৎকারে আর বাধা-বিপত্তি পোহাতে হবে না।


শেয়ার করুন....,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *