
লালমোহনে জোরপূর্বক জমি
দখলের চেষ্টার অভিযোগ
ভোলা প্রতিনিধিঃ
ভোলার লালমোহন উপজেলায় ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়েস্টার্ণ পাড়ার হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ করে ওই জমির মালিক ও হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনের ছোট ভাই মো. ফখরুল আলম বলেন, আমার ভাই মো. রুহুল আমিন মুন্সির হাওলা মৌজায় স্থানীয় মো. মোজাম্মেল হাওলাদারের কাছ থেকে বসতঘরসহ ২৫.৩৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ক্রয়ের পর থেকে ওই জমি আমার ভাই ভোগ দখলে রয়েছেন। তবে মো. আবু সাঈদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাইয়ের ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
আরো পড়ুনঃ
চৌদ্দগ্রাম সীমান্তে বিএসএফ হস্তান্তর করা ১৯ জনকে থানায় হস্তান্তর করলো বিজিবি
বৃহস্পতিবার ওই জমিতে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে আমাদের ভাড়াটিয়াদের চলাচল করতে নিষেধ করেন তিনি। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমি থানা পুলিশকে জানাই।
এরপর পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি তারা বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তায় গেট নির্মাণ করেছেন। তার কাছে এর কারণ জানতে চাইলে তিনি সবার সামনে আমাকে মারধর করতে এগিয়ে আসেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
অথচ তিনি জমিতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা আনেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) আদালতের সেই নিষেধাজ্ঞা নিজেই অমান্য করে আমার ভাইয়ের জমিতে থাকা ভাড়াটিয়াদের চলাচলের রাস্তায় জোরপূর্বক গেট নির্মাণ করেন। একইসঙ্গে ভাড়াটিয়াদের বাড়িতে ঢুকতে এবং বের হতে নিষেধ করেন। তিনি আরো বলেন, আমার ভাই অসুস্থ থাকায় তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। তার অনুপস্থিতিতে ওই জমিসহ প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম আমিই দেখাশোনা করছি। তবে জোরপূর্বক আবু সাঈদসহ তার স্বজনরা মিলে আমাদের ওই জমি দখল করতে নানাভাবে হয়রানী করছে।
বিভিন্ন সময় ভাড়াটিয়াদের পানির লাইন কেটে দিয়েছে, বাড়িতে যাতায়াতের পথে কাটাও দিয়েছে। এনিয়ে কয়েকবার থানায় বসাবসি হয়েছে। তারমধ্যে আবু সাঈদ আবার লোকজন দিয়ে আমার ভাইয়ের ক্রয়কৃত জমি থেকে সুপারি পেরে নিয়েছেন। বর্তমানে আবু সাঈদসহ তার আত্মীয়-স্বজনরা আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই চরম আতঙ্কে রয়েছি। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায় বিচার কামনা করছি।
এদিকে ওই জমির বিক্রেতা মো. মোজাম্মেল হাওলাদার জানান, জমি বিক্রির দেড় মাস আগে আত্মীয়-স্বজনসহ বাড়ির সবাইকে জানিয়ে হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে বায়নাচুক্তি করি। এরপর তিনি জমিতে সাইনবোর্ডও টানান। পরে সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ওই জমি রুহুল আমিন মাস্টারের কাছে যথাযথ মূল্যে বিক্রি করেছি।
এখন আমার ভাই আবু সাঈদ রুহুল আমিন মাস্টারকে শুধু শুধু হয়রানী করছেন। তাদের অত্যাচারে সেখানে থাকা আমার অন্য জমিতেও আমি নিজে থাকতে পারছি না। আমি এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেবো।
অভিযোগের ব্যাপারে মো. আবু সাইদ বলেন, আমি কাউকে কোনো ধরনের গালাগালি করিনি এবং হুমকি-ধামকিও দেইনি। তবে রুহুল আমিন মাস্টার যে জমি কিনেছেন তিনি সেই জমি রেখে অন্য জমিতে দখল নিয়েছেন। এটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এছাড়া আদালত থেকে যে জমিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সে জমিতে আমি কোনো গেট নির্মাণ করিনি। আমি অন্য দাগের জমিতে গেট নির্মাণ করেছি।
এ বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনের জমি একটি গ্রুপ জোরপূর্বকভাবে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে আমি জেনেছি। তবে ওই জমি সংক্রান্ত বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তাই এর সমাধান আদালত থেকেই দেওয়া হবে। তবে বৃহস্পতিবার ওই জমিতে গেট নির্মাণের খবর পেয়ে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে সেখানে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছি।