
অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত গরু
জবাইয়ে সংক্রমিত-১১
আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত গরু জবাই ও মাংস নাড়াচাড়া (কাটাকাটি) করায় একই গ্রামের ১১ জন সংক্রমিত হয়েছেন।
এদের মধ্যে ৫ জন হাসপাতাল ও অন্যান্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, উপজেলার বেলকা ইউপি সদস্য কিশামত সদর গ্রামের হাফিজার রহমানের প্রতিবেশী মাহবুর রহমানের একটি অসুস্থ্য গরু বাজার মূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দর কষাকষি করে স্থানীয়রা জবাই করেন।
জবাইকৃত গরুর মাংস বিভাজনের জন্য ১১জন মিলে নাড়াচাড়া (কাটাকাটি) করেন। এর ৪ দিন পর বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ঐ ১১ জনের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গে ফোঁসকা উঠে মাংসে পঁচন দেখা দেয়।
সংক্রমিতদের মধ্যে অধিকাংশ জনের হাত, নাক, মুখ, চোখের পাশের মাংসে অক্রান্ত দেখা দেয়। এদের মধ্যে মাহবুর রহমান, মোজাফফর হোসেন, মোজাম্মেল হক ও শফিকুল ইসলামের অবস্থা গুরুতর হলে স্বজনরা তাদেরকে গাইবান্ধা রাবেয়া ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করান।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা (ইউএলও) ডা. বিপ্লব কুমার দে জানান, বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে অসুস্থ্য গরু জবাইয়ে বিভিন্নভাবে অংশগ্রহণকারী ১১জন ব্যক্তি আক্রান্ত হবার বিষয়টি ৪ দিন পরে জানতে পেরেছি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জবাইকৃত গরুর কোন নমুনা সংগ্রহ করতে পারিনি। যেহেতু, রোগাক্রান্ত গরু জবাই, মাংস বেচা-কেনা, সংরক্ষণ করে অনেকেই অসুস্থ্য হচ্ছেন। তাই, যাতে রোগাক্রান্ত গরু জবাই, মাংস বেচা-কেনা, সংরক্ষণ না করা হয় এজন্য মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিকল্পে প্রচারাভিযান চলছে।
এছাড়া, গৃহ-পালিত গবাদি পশুকে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরাধীন ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম চলছে।
এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ৪’শ মাত্রার ভ্যাকসিন পেয়েছি। তারমধ্যে প্রায় ২৪ হাজার প্রয়োগ করা হয়েছে। রোগাক্রান্ত পশু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞাসহ এ পর্যন্ত একজনের ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়া, সোনারায় ইউনিয়নের রোগাক্রান্ত গরু জবাইয়ের সংবাদ পেয়ে সমস্ত মাংস মাটিতে পুতে রাখা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক জানান, রোগাক্রান্ত পশু জবাইয়ে অসুস্থ্য হয়ে কয়েকজন ব্যক্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলে তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয়। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হবার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজকুমার বিশ্বাস জানান, উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের উদ্যোগ সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও সামাজিক প্রতিনিধিগণকে নিয়ে সভা করা হয়েছে।
এতে হোমিও ভিজিটের মাধ্যমে অ্যনথ্রাক্স আক্রান্ত বা রোগাক্রান্ত পশুগুলোকে একত্রিত করণপূর্বক চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন-যথারীতি নিয়ম অনুসরণ না করে যদি কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ পশু জবাই করে, মাংস বেচা-কেনা, সংরক্ষণ করে আর তা যদি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে তাহলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।