
রামুতে ট্রেন-অটোরিক্সা সংঘর্ষে নিহত-৫ : আড়াই ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ
ইয়ার রহমান আনান, কক্সবাজারঃ
কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগরে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে তিন বছরের এক শিশু ও তার ১৩ মাস বয়সী ছোট ভাইও রয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১টার দিকে রশিদনগর ইউনিয়নের ধলিরছড়া রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা রেললাইন অবরোধ করে রাখে। ফলে আড়াই ঘণ্টা কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
নিহতরা হলেন, ঈদগাঁও মেহেরঘোনা এলাকার মোহাম্মদ সৈয়দ নুরের ছেলে ও অটোরিকশাচালক হাবিব উল্লাহ (৪০), ভারুয়াখালী এলাকার আবদুল মান্নানের স্ত্রী রেনু আকতার (৩২), কালিরছড়া এলাকার হাফেজ জান্নাত উল্লাহর স্ত্রী আসউল হোসনা (২৭) এবং তার দুই সন্তান আতাউল্লাহ (১৩ মাস) ও আশেক উল্লাহ (৩)।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈয়বুর রহমান বলেন, দুপুরে কক্সবাজার রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ধলিরছড়া রেলক্রসিং অতিক্রম করছিল।
এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবোঝাই অটোরিকশা রেললাইন পার হচ্ছিল। ট্রেনটি অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত নিয়ে যায়।
তিনি জানান, ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই চালকসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
নিহতদের লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল মালেক মাসুম বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই ট্রেনটি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তবে বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেনটি রশিদনগর এলাকায় পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ জনতা তা আটকে দেয়।
তিনি আরও বলেন, বিক্ষুব্ধ মানুষ রেললাইন অবরোধ করে রাখে।
এতে কক্সবাজার রুটে সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
পরে বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতাকে সরিয়ে দেয়। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রেলক্রসিংটিতে কোনো গেটম্যান বা সতর্কতামূলক সংকেত ছিল না। ফলে প্রায়ই এই এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। নিরাপদ রেলক্রসিং এবং রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।