
ভাবিকে পিটিয়ে হত্যা
করলো দেবর !
সৌরভ মাহমুদ হারুন, ব্রাহ্মণপাড়াঃ
বুড়িচং উপজেলায় কুলখানি অনুষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে ভাবিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দেবর ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, হত্যার পর লাশের মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যার প্ররোচনা সাজিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের ছোট হরিপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার বাড়িতে। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
নিহত সাদিয়া আক্তার (২২) উত্তর কোদালিয়া মুহুরী বাড়ির সৌদি প্রবাসী রেজাউল করিমের মেয়ে এবং ছোট হরিপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী হাবিবুর রহমান (৩০)-এর স্ত্রী। তিনি এক সন্তানের জননী ছিলেন।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে নিহতের মা রুবি আক্তারের কাছ থেকে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে চাচাতো দাদা আবুল হোসেনের কুলখানিতে দাওয়াত খেয়ে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সাদিয়া।
এ সময় দেবর রাব্বি এসে প্রকাশ্যে তাকে জোরপূর্বক মারধর করে বাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
পরে সেখানে শাশুড়ি রহিমা বেগম, শ্বশুর মোস্তফা ও ননদ সোনালী আক্তার, আমেনাসহ সবাই মিলে পিটিয়ে হত্যা করে—এমন অভিযোগ করেন তিনি।
রুবি আক্তার আরও জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে সাদিয়াকে নির্যাতন চালানো হতো। এছাড়া স্বামীর পরকীয়ার বিষয়টি জানার পর থেকে সংসারে অশান্তি বাড়ে। এই সুযোগে দেবর রাব্বি কুকর্মের প্রস্তাব দিত সাদিয়াকে। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
নিহতের চাচা নাজমুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, আমরা লাশ নিতে হাসপাতালে গেলে তারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়।
নিহতের দাদা মনু মিয়া, ফুফু শিরিনা আক্তার,প্রতিবেশী সেলিম,সেলিনা কাশেম, রব্বান, গ্রাম পুলিশ জাহেরসহ অনেকে জানান, কুলখানি থেকে স্বামীর বাড়িতে যেতে দেরি হওয়ায় দেবর রাব্বি এসে সাদিয়াকে মারধর করে নিয়ে যায়; কিছুক্ষণ পরই খবর আসে সাদিয়া আর নেই।
নিহতের পরিবারের দাবি, এটি সুপরিকল্পিত হত্যা। তারা দ্রুত সকল আসামির গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন।নিহতের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
বুড়িচং থানার এসআই রাকিব জানান, লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুল ইসলাম জানান, নিহত সাদিয়ার পরিবারের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ননদ সোনালী আক্তার ও আমেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তরা পলাতক। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।