
পিরোজপুরে ২ সাংবাদিকের ওপর
হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
মোঃনাজমুল হোসেন, পিরোজপুরঃ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক জনকণ্ঠের জেলা সংবাদদাতা নাছরুল্লাহ আল-কাফী ও নাগরিক প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি আরিফ বিল্লাহর ওপর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে আহত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে শহরের টাউন ক্লাব সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ওই দুই সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে পিরোজপুর জেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, সময় টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি জিয়াউল হক, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন জুয়েল, দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি নাছির উদ্দিন, গাজী টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি নাইম তালুকদার, দৈনিক আমার বার্তা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মনির চৌধুরী, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ এর জেলা সেক্রেটারি মানজুর আজিজ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পরিকল্পিতভাবে একটি মহল তাদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে তাদের মোবাইল ও বিভিন্ন ডিভাইস ছিনিয়ে নেয়।
আহত সাংবাদিকরা পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন পিরোজপুরে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। এর আগে রোববার উপজেলার চন্ডিপুর এলাকায় সুপারি কেনাবেচা ও পরিবহন নিয়ে খবর সংগ্রহ করছিলেন ওই দুই সাংবাদিক। বিকেলে চন্ডিপুর ইউনিয়ন বিএনপির একটি সমাবেশ চলছিল।
এসময় সাংবাদিকরা সুপারি ট্রাকে তোলা এবং বাজারসংক্রান্ত ভিডিও ধারণ কর ছিলেন। সমাবেশে উপস্থিতি কম থাকায় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী মনে করে সাংবাদিকরা তাদের ফাঁকা চেয়ারের ছবি তুলছে এমন সন্দেহে তারা অতর্কিতভাবে ওই দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায় এবং তাদের কাছে থাকা তিনটি মোবাইল ফোন, মাইক্রোফোন, ক্যামেরা স্ট্যান্ড, পেনড্রাইভ, প্রেসকার্ড, মানিব্যাগ ও তাদের সাথে থাকা কিছু টাকা ছিনিয়ে নেয়।
পরে স্থানীয়রা আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে রাতে দু’জনকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে আহত আরিফ বিল্লাহ এর ভাই শরিফ বিল্লাহ বাদী হয়ে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাসহ ৮ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে গুরুতর আহত হওয়ায় ওই দুই সাংবাদিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মামলার আসামীরা হলেন, চন্ডিপুর (খোলপটুয়া) গ্রামের হাবিবুর রহমান শেখের ছেলে যুবদল নেতা অহিদুল ইসলাম শেখ (৩৫), দক্ষিণ চন্ডিপুর গ্রামের হারুন মৃধার ছেলে ছাত্রদল নেতা ফাইজুল ইসলাম তাওহিদ মৃধা (২১), পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের আব্দুল আউয়াল বেপারী এর ছেলে তানভীর আহমেদ রাকিব (২২), উত্তর কলারন গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে মো: জুয়েল হাওলাদার (৪০), পশ্চিম কলারন গ্রামের আলি আকবার তালুকদারের ছেলে বিএনপি কর্মী শাহাদাৎ হোসেন হিরু তালুকদার (৪৮), পশ্চিম চরবলেশ্বর গ্রামের মেনহাজ এর ছেলে যুবদল নেতা ফারুক হোসেন (২৮) ও আল আমিন শেখ (৪২)সহ আরও ২০/২৫ জন।
ইন্দুরকানী থানার ওসি (তদন্ত) মো. মোস্তফা জাফর বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।