কুষ্টিয়া-১ আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী-জামায়াতের চূড়ান্ত

আইন আদালত খুলনা জাতীয় রাজনীতি সারাদেশ
শেয়ার করুন....,

কুষ্টিয়া-১ আসনে বিএনপির একাধিক

প্রার্থী-জামায়াতের চূড়ান্ত

হৃদয় রায়হান, কুষ্টিয়াঃ

কুষ্টিয়ার অবহেলিত উপজেলা দৌলতপুর ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গড়িত এই উপজেলা। ২টি ইউনিয়ন মূল ভূখণ্ড থেকে বিছিন্ন দুর্গম চরাঞ্চল। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছরেও উন্নয়ন বিমুখ সীমান্তবর্তী এই উপজেলার মানুষেরা। একটি উপজেলা নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসন।

দীর্ঘদিন পর নিজেদের ভোটে সংসদ সদস্য নিজেরাই গঠন করতে চান। ৪৬০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের প্রায় ৭ লাক্ষাধীক জনগোষ্ঠীর বৃহৎ উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা আজও রয়েছে নাজুক অবস্থায়।

৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম অবস্থা। ৫টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও তা অচল অবস্থা। নেই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন।

ফলে প্রতি বছর আগুনে ক্ষতির শিকার হন সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। পার্শ্ববর্তী জেলা মেহেরপুর থেকে আয়তনে বড় হলেও পৌরসভা না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নাগরিকরা।

দৌলতপুরের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াতে এখনো গরু ও মহিষের গাড়ির ওপর ভরসা করে আছেন চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বৃহৎ জনগোষ্ঠী। নেই উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা জন্য কলেজ তাই শিক্ষার্থীদের  দুর্গম চলাঞ্চল পাড়ি দিয়ে আসতে হয় উপজেলা শহরে যা খুব কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। বন্যার সময় প্রতি বছর কমপক্ষে তিন মাস জলমগ্ন হয়ে থাকে দুই ইউনিয়ন।

প্রায় ১ লাখ মানুষকে দুর্গম চরাঞ্চল পাড়ি দিয়ে চিকিৎসা নিতে যেতে হয় দৌলতপুর অথবা কুষ্টিয়া সদরে। তাই দৌলতপুরবাসীর আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্বের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই নেতৃত্ব দিয়ে তরুণদের মন জয় করেছেন দৌলতপুর উপজেলার চুয়ামল্লিকপাড়ার সন্তান ঢাকা উত্তর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিন জুয়েল।

তিনি পতিত হাসিনা সরকার পতন আন্দোলনের সম্মুখ সারির যোদ্ধা।

ইতিমধ্যে দৌলতপুরের প্রতিটি গ্রাম, পাড়া ও মহল্লায় গণসংযোগ করেছেন তিনি। তিনি জানান, সবার আগে বেকার সমস্যা দূর করতে কাজ করবেন। চরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচনে সর্বাধিক গুরুত্ব দিবেন।

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত দৌলতপুর গড়তে যা যা করণীয় তাই করবেন। এমন প্রতিশ্রুতির ফলে তরুণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। শুধু তরুণ ভোটারই নয়, তার প্রতি আস্থা বেড়েছে নারী ও বয়োবৃদ্ধ ভোটরদেরও দৌলতপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছরে কোন নারী সমাবেশে না হলেও শরিফ উদ্দিন জুয়েল ৫ হাজারের অধিক নারী নেতাকর্মী নিয়ে সফল সমাবেশ করেছেন।

তবে দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লাও পিছিয়ে নেই। তার বাবা ৪ বারের এমপি ও মন্ত্রী প্রয়াত আহসানুল হক পচা মোল্লা। বাবার হাতেগড়া দৌলতপুর বিএনপি’র সংগঠন এখনো তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভোটের মাঠেও রয়েছেন সক্রিয়।

তিনিও দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও দলীয় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। মনোনয়ন দেয়া হলে কুষ্টিয়া-১ আসনটি তারেক রহমানকে উপহার দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুনঃ

নিয়ামতপুরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চালের কার্ড করে দেয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ

 

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারন সম্পাদক শহিদ সরকার মঙ্গল তিনি প্রায়ত সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম সরকারের ভাই ও সাবেক উপজেলা ছাত্রদল, সাবেক উপজেলাে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবিদ হাসান মন্টি সরকারের চাচা।

ভোটের মাঠে সক্রিয় আছেন, উপজেলা বিএনপি-সাবেক সভাপতি আলহাজ আলতাফ হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুজ্জামান হাবলু মোল্লা ও অ্যাডভোকেট মো. রমজান আলী।

অপরদিকে, ভোটের মাঠে নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দৌলতপুর শাখার নেতৃবৃন্দ। উপজেলা আমীর উপাধ্যক্ষ মো. বেলাল উদ্দিনকে কুষ্টিয়া-১ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে দিন-রাত নির্বাচনী গণসংযোগ ও ভোটের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

উপাধ্যক্ষ বেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে দৌলতপুর জামায়াত নেতৃবৃন্দের নির্বাচনী প্রচারণায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাদের এগিয়ে যাওয়া এবং নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর বাচায়ে ভুল হলে বিজয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে অভিমত রয়েছে সাধারণ ভোটারদের।

সৎ লোকের শাসন এবং সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিমুক্ত সুন্দর দৌলতপুর গড়তে জায়ামাতকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন উপাধ্যক্ষ বেলাল উদ্দিন।

এ ছাড়াও ভোটের মাঠে দেখা না গেলেও এ আসনে বেশ কয়েকটি দলের নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন এনসিপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী নুসরাত তাবাসসুম, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান।


শেয়ার করুন....,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *