লালমোহনে পল্লী বিদ্যুতের ৩১ ট্রান্সফরমার খুলনায় বিক্রির চেস্টা আটক-২ 

অর্থনীতি আইন আদালত খুলনা জাতীয় বরিশাল সারাদেশ
শেয়ার করুন....,

লালমোহনে পল্লী বিদ্যুতের ৩১ ট্রান্সফরমার

খুলনায় বিক্রির চেস্টা আটক-২ 

ভোলা প্রতিনিধিঃ

ভোলার লালমোহন থেকে পল্লী বিদ্যুতের ৩১টি ট্রান্সফরমার খুলনা নেওয়ার পথে বরিশালে আটক হলেও মূল অভিযুক্ত ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতের লালমোহন জোনাল অফিসের জুনিয়র অফিসারকে দিয়ে কেবল মাত্র একটি চুরির মামলা দায়ের করে দায়মুক্তির চেস্টা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে লালমোহন জোনাল অফিস।

অফিসের কারো সংশ্লিস্টা এড়াতে উর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তাদের মামলার বাদী না করে রহস্যজনক কারণে জুনিয়র অফিসারকে বাদী করে চুরির মামলা করায় পার পেয়ে যেতে পারেন আসল অপরাধী এমনটাই মনে করেন উপজেলা গ্রাহক সুরক্ষা কমিটি।

অন্যদিকে লালমোহন জোনাল অফিস ও অভিযুক্ত ঠিকাদার আটককৃত ট্রান্সফরমারগুলো অকেজো দেখানোর পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ধরা পরার কারণে এই দফা ৩১টি ট্রান্সফরমার জব্দ হলেও এর আগেও এভাবে গোপনে ট্রান্সফরমার বিক্রি হতো কি না তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।

আরো পড়ুনঃ

আশুলিয়ায় মাতাব্বর স্কুলে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

 

এদিকে এ ঘটনায় অনুসন্ধানের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন আদালত। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, পল্লী বিদ্যুত সমিতি ও পিডিবি’র প্রতিনিধি নিয়ে ৩ সদস্য বিশিস্ট এই কমিটি গঠন করা হয়।

এদিকে ট্রাকসহ ট্রান্সফরমারগুলো জব্দের সময় আটক ২ ব্যক্তি বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। তারা ট্রাক চালক ও বহনকারী। তবে অভিযুক্ত ঠিকাদার এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। নৈপথ্যে থেকে তার অপতৎপরতা চলমান রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর লালমোহন থেকে খুলনা নেওয়ার পথে বরিশাল বিমানবন্দর থানা এলাকায় পুলিশের হাতে ৩১টি ট্রান্সফরমারসহ একটি ট্রাক জব্দ হয়। বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ট্রাকে থাকা দুই ব্যক্তি খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার শওকত হোসেনের ছেলে মো. সজল ও ভোলার শশীভূষণ থানার ইসমাইল সরদারের ছেলে মো. হাসানকে ওই সময় গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ট্রান্সফরমারগুলো লালমোহন থেকে নিয়ে গেছে বলে স্বীকার করে।

এগুলো পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার সাদ্দাম হোসেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভোলা পল্লী বিদ্যুত সমিতির স্টোর থেকে দুইটি কার্যাদেশের বিপরিতে উত্তোলন করে। ওই ঠিকাদার চরফ্যাশন উপজেলার চেয়ারম্যান হাট এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে।

তিনি চরফ্যাশন ও লালমোহন উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদারি কাজে নিয়োজিত। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের দাবী শুধু ঠিকাদার এককভাবে এগুলো এক এলাকার মালামাল অন্য এলাকায় নিতে সাহস করে না। এর সাথে অফিসের কেউ না কেউ সংশ্লিস্ট থাকতে পারে।

পল্লী বিদ্যুতের এসব মালামাল অন্য এলাকায় নেওয়া নিয়মবহির্ভূত বলে জানায় সংশ্লিস্টরা। মামলার সূত্র মতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২টি কার্যাদেশের মাধ্যমে ঠিকাদার সাদ্দাম হোসেন ট্রান্সফরমার ও বিভিন্ন মালামাল ভোলা বাংলাবাজার পল্লী বিদ্যুতের স্টোর থেকে উত্তোলন করেন।

সেগুলো লালমোহন ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পেশকার হাওলা এলাকায় (ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন) তার ভাড়া করা বাসায় রাখেন। সেখান থেকেই কৌশলে খুলনা নিয়ে যাওয়া হয় ৩১টি ট্রান্সফরমার। যদিও মামলার এজাহারে বলা হয়েছে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সূত্র মতে ঠিকাদারের এসব ট্রান্সফরমার লাগানোর কাজে তদারকি করার কথা লালমোহন পল্লী বিদ্যুতের এজিএম (অপারেশন) খালেদ মাসুদ মজুমদার ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের।

উত্তোলনকৃত ট্রান্সফরমার ও প্রয়োজনীয় মালামাল কোথায় কিভাবে লাগানো হয়, তার রিপোর্ট দিবেন তারা। ওই রিপোর্টের পর ডিজিএম স্বাক্ষর করে ভোলা অফিসে পাঠালে বিল উত্তোলন করেন ঠিকাদার। কিন্তু এরপরও কিভাবে ৩১টি ট্রান্সফরমার খুলনায় নিয়ে যাওয়া হলো এবং এর সাথে আর কে কে জড়িত থাকতে পারে তার সঠিক তদন্ত করার দাবী করেন লালমোহনের গ্রাহকগণ।

লালমোহন নাগরিক সুরক্ষা কমিটির সভাপতি সোহেল আজীজ শাহিন বলেন, লালমোহন পল্লী বিদ্যুৎ অফিস এই ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারে না। তারা নিজেদের রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। থানা পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করলে ঘটনার সাথে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচন হবে।

লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। আসল অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেস্টা চলছে। তদন্তের অংশ হিসেবে লালমোহন জোনাল অফিসকে পত্র দেওয়া হয়েছে, বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার জন্য।

লালমোহন জোনাল অফিসের ডিজিএম মাহমুদুল হাসান জানান, উদ্ধার হওয়া ট্রান্সফরমারগুলো লালমোহন থেকে নিয়ে যাওয়ার কারণে চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার তদন্তে যে-ই অপরাধের সাথে যুক্ত আছে বলে প্রমাণিত হবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।


শেয়ার করুন....,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *