
ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রধান শিক্ষককে হত্যার হুমকির সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে
সৌরভ মাহমুদ হারুন. ব্রাহ্মণপাড়াঃ
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মনগোছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ আমেনা বেগমকে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরীফুল ইসলাম খারাপ আচরণ ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২১ আগস্ট বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ আমেনা বেগম ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ১৯ আগস্ট ২০২৫-২৬ অর্থবছরের স্লিপ প্ল্যান গঠনের কাজ চলাকালে বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষক শরীফুল ইসলাম হঠাৎ করে কাজ অসমাপ্ত রেখেই চলে যেতে চান।
আরো পড়ুনঃ
প্রধান শিক্ষক তখন তাকে ৫ মিনিট অপেক্ষা করতে বললে তিনি তা না মেনে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন এবং জানান, “চান্দলা বাজারে প্রোগ্রামে সময় দেওয়া আছে।”
পরদিন (২১ আগস্ট) স্কুলে প্রধান শিক্ষক তাকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে, শরীফুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং বলেন, “পাঁচ দিন আগে বলেন নাই কেন?” তখন অপর সহকারী শিক্ষক সানজিদা মন্তব্য করেন, “স্যার (প্রধান শিক্ষক) কোনো অন্যায় কথা বলেননি।”
এ কথার পরপরই শিক্ষক শরীফুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকর্মীকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনি অসৎ, তার পক্ষ নিচ্ছেন মানে আপনিও অসৎ।”
প্রধান শিক্ষক আপত্তি জানালে শরীফুল ইসলাম আরও উগ্র আচরণ করেন, চিৎকার করে বলেন “চুপ! পরিবার নিয়ে কথা বলবেন না”—এবং হুমকিস্বরূপ তার দিকে তেড়ে আসেন।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষক নূরুল আমিন এসে শরীফুল ইসলামকে সরিয়ে নিয়ে যান। তবুও তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, “আপনাকে একেবারে মাইরালাম।”
প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ আমেনা বেগম বলেন, “এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
অভিযুক্ত শিক্ষক শরীফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং আমরাও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা পারভীন বলেন, “আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে পূর্ব থেকেই দ্বন্দ্ব রয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরাও একটি পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন।”