কুড়িগ্রামে মৃত গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ

অর্থনীতি আইন আদালত রংপুর সারাদেশ
শেয়ার করুন....,

কুড়িগ্রামে মৃত গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ

মোঃ এনামুল হক বিপ্লব, কুড়িগ্ৰামঃ

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ফরকেরহাট বাজারে মরা গরু জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার (২৩ আগস্ট ২০২৫) দুপুরে এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ফরকেরহাট বাজারের মাংস বিক্রেতা আলম মিয়া, যিনি এলাকায় “আলম কসাই” নামে পরিচিত, একটি মরা গরু জবাই করে বাজারে মাংস বিক্রি করতে থাকেন।

 

বিষয়টি প্রথমে কয়েকজন ক্রেতার চোখে পড়ে। তারা সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়দের জানালে বিষয়টি দ্রুত বাজারে ছড়িয়ে পড়ে।

 

পরে স্থানীয়রা উমর মজিদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসানুল কবির আদিলকে খবর দেন।

চেয়ারম্যান ঘটনাটি অবহিত করলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশাদুল হক তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা স্যানিটারি পরিদর্শক আব্দুল লতিফ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তবে তার আগেই অভিযুক্ত কসাই আলম মিয়া মাংস ফেলে রেখে গা ঢাকা দেন।

পরে স্যানিটারি পরিদর্শকের উপস্থিতিতে জবাইকৃত গরুটি মাটিচাপা দেওয়া হয়। তিনি জানান—“মরা গরুর মাংস খাওয়ায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। তাই মাংসটি ধ্বংস করা হয়েছে। পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে এ ঘটনায় বাজারজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভোক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন কসাই যদি এমন অপরাধমূলক কাজ করে তাহলে সাধারণ মানুষ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে। তারা অভিযুক্ত কসাইকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

উমর মজিদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহসানুল কবির আদিল বলেন, “আলম কসাইয়ের এ কাজ সম্পূর্ণ ঘৃণ্য এবং অমানবিক। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে মরা গরুর মাংস বিক্রি কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য নয়। আমি উপজেলা প্রশাসনের নিকট তার দ্রুত গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

স্থানীয় বাসিন্দা মনু মিয়া বলেন, অভিযুক্ত আলম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে ফরকেরহাট বাজারে মাংস বিক্রি করে আসছেন। তবে এর আগে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠেনি। তবুও এবারের ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মরা পশুর মাংস খেলে খাদ্যে বিষক্রিয়া, ডায়রিয়া, জ্বর, হেপাটাইটিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বাজারগুলোতে নিয়মিত তদারকির দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত কসাইয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রক্রিয়া চলছে।


শেয়ার করুন....,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *