
সুন্দরগঞ্জে সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ
আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে কর্মরত এক সাংবাদিককে জড়িয়ে মিথ্যা মামলার আরজী বর্ণিত অভিযোগ, প্রভাবিত ও পূর্ববর্তী তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছেন সচেতন সাংবাদিক সমাজ।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) ঢাকা প্রেস ক্লাব’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রেস ক্লাব-সুন্দরগঞ্জ’র সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিক এ বিষয়ে বলেন, উপজেলার ধর্মপুর আব্দুল জব্বার ডিগ্রি কলেজের অর্থনীতি বিষয়ের প্রভাষক এহেতেশামুল হক ডাকুয়া স্বাক্ষর জালিয়াতিমূলক ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করেন।
মর্মে কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ সামিউল ইসলামের দায়েরকৃত মামলায় দীর্ঘ হাজতবাসের পর জামিনে বেরিয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
গাইবান্ধার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে (সুন্দরগঞ্জ) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২০ সালের আগষ্ট মাসে মামলাটি দায়ের করতে বাদী নিজেই সংশ্লিষ্ট অপরাধ সংগঠিত করে সাংবাদিক আমাকে (আবু বক্কর সিদ্দিককে) আসামী করেন।
মামলার অপর ২ আসামী হলেন- কলেজের অধ্যক্ষ (তৎকালীন) সামিউল ইসলাম ও সাংবাদিক ক্বারী আবু জায়েদ খান। মামলায় প্রকৃত ঘটনা আড়াল রেখে আংশিক ও বিকৃত তথ্য প্রদর্শন করায় সার্বিক তদন্তে সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অপরাধ প্রমাণিত হয়নি মর্মে তদন্তকারী কর্মকর্তা গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম পরবর্তী ২০২১ সালের ৭ মার্চ বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এতে তিনি ‘সিআইডি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ থেকে সিডিআর ডিস্ক’ অনুযায়ী সহমত পোষণ করে উল্লেখ করেন সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিক ও অধ্যক্ষ সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা না থাকায় তাঁদেরকে অব্যাহতিদানের কথা উল্লেখ করেন।
অপর আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সিআইডি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ থেকে সিডিআর ডিস্ক অনুযায়ী সহমত পোষণ করেন।
পরবর্তীতে বাদীর নারাজীর প্রেক্ষিতে মামলাটি পূণঃতদন্তের জন্য গাইবান্ধা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) শামীম হাসান সরদার বাদীর আরজী বর্ণিত অভিযোগ মর্মে ২০২২ সালের ২৭ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে বাদী কর্তৃক প্রভাবিত ও মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদনে পূর্ববর্তী তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ থেকে সিডিআর ডিস্ক’র তথ্যাদী উপেক্ষা করে অধ্যক্ষ ও ২ সাংবাদিকসহ ৩ জনকে আসামীতে বহাল রাখার মতামত প্রদান করেন।
এব্যাপারে সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিক বিজ্ঞ আদালতের নিকট ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে বলেন, বাদী তার আরজী বর্ণিত অভিযোগে (মামলায়) আমাকে জড়ানোর ব্যাপারটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও হয়রাণিমূলক। যা তথ্য প্রযুক্তি ও পূর্ববর্তী তদন্তে প্রমাণিত হয়নি।
আমার ব্যক্তিগত পরিচিতি উল্লেখ করে ‘ডোনেট বাংলাদেশ’ নামে একটি গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করলেও ঐ গণমাধ্যমের সম্পাদক, প্রকাশক বা সংশ্লিষ্ট কাউরে নাম উল্লেখ করেননি বা গণমাধ্যমটির প্রত্যািয়িত কোন পত্র সংযুক্ত করেননি। আমি ঐ গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত নই বা ছিলামনা।
মামলায় আমার ব্যক্তিগত পরিচিতি যথাযথভাবে উল্লেখ করলেও বয়সসীমা অধিক পরিমাণ উল্লেখ করেন।
আমাকে আসামী করার পর বাদী প্রভাষক এহেতেশামুল হক ডাকুয়া তাঁর নিকটতম ৩ স্বজনের মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারের নামে অযৌক্তিকভাবে দাবী করে কয়েকদফা প্রস্তাব পাঠান। আমি তা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করি।
এদিকে, বাদীর নারাজীর প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতে বাদী কর্তৃক প্রভাবিত ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করে আমাকে (সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিককে) হয়রাণি করতে ‘সিআইডি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ থেকে সিডিআর ডিস্ক’ ও সংশ্লিষ্ট বিধি উপেক্ষা করে ২০২২ সালের ২৭ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তৎকালীন গাইবান্ধা ক্রিমিনাল ইনভেষ্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) শামীম হাসান সরদার।
এতে তিনি ২ সাংবাদিকসহ ৩ আসামীকে বহাল রাখার মতামত প্রদান করেন।
সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিক আরো বলেন, রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন এ মামলায় ২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী দো-তরফাসূত্রে (উভয় পক্ষের) যুক্তিতর্ক শুনানীঅন্তে ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক ড. আব্দুল মজিদ তাঁর (সাংবাদিকের) জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
অধ্যক্ষ ছামিউল ইসলাম কর্তৃক স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলায় প্রভাষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে স্থানীয় সাংবাদিক নেতা হিসেবে আমাকে (আবু বক্কর সিদ্দিককে) জড়িয়ে মিথ্যাভাবে মামলা ও তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।
দেশে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রাণিমূলক মামলা প্রবণতা কমাতে সার্বিক বিবেচনা পূর্বক ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছেন পেশাদার ও সচেতন সাংবাদিক সমাজ।