
লাকসামে ইউএনও’র বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ
লাকসাম প্রতিনিধিঃ
লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাউছার হামিদের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করায় কুমিল্লা ও নোয়াখালী চলাচলকারী বিভিন্ন পরিবহন আটকা পড়ায় কয়েক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় অবরোধ চলায় জন ভোগান্তি দেখা দেয়।
সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৬টায় প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আজ শুক্রবার বিকেল প্রায় সাড়ে ৪টায় সড়ক অবরোধ করে শুরু হয়ে সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৬টা অবরোধ সরিয়ে নেয়া হয়।
জানা যায়, লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাউছার হামিদ কে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বরিশাল বিভাগে বদলির আদেশ প্রদান করা হয়। বদলির আদেশ প্রত্যাহার দাবীতে গত কয়েক দিন থেকে বিভিন্ন ব্যানারে আন্দোলন চলছে।
এরই অংশ হিসাবে আজ শুক্রবার বিকেল প্রায় সাড়ে ৪টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম বাইপাস চত্বরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থী ও জনতা সড়কের মাঝখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করে।
সংবাদ পেয়ে লাকসাম থানা ও ট্রাফিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়ক অবরোধ সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানায়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে সড়ক অবরোধ ও সমাবেশ চালিয়ে যায়।
অবরোধের সময় ভাড়ার সাথে সাথে কুমিল্লা -নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে যানজট বাড়তে থাকে।
অবরোধের ফলে ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালী, লক্ষিপুরগামী যাত্রীবাহি বাসসহ বিভিন্ন পণ্যবাহি পরিবহনের লাইন কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কের খিলা বাজার পর্যন্ত পৌঁছায়।
এদিকে নোয়াখালী ও লক্ষ্মিপুরগামী যাত্রীবাহি বাসসহ বিভিন্ন পণ্যবাহি পরিবহনের লাইন পাশ্ববর্তী লালমাই উপজেলার হরিশ্চর বাজার পৌঁছে। বাসে থাকা যাত্রী ও রোগী বহনকারী এ্যাম্বোলেন্সের ভিতরে রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়।
আন্দোলনকারী সুমন জানায় ইউএনওর বদলীতে লাকসামের অনেক ক্ষতি হবে। তিনি এগারো মাসে অনেক জন বান্ধব কাজ করেছেন। আমার জেলা প্রশাসক কে বলবো ইউএনওর বদলীর আদেশ প্রত্যাহার করা হোক। অন্যথায় আন্দোলন আরও বেগবান করা হবে।
নোয়াখালীগামী বাসের এক যাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ইউএনওর বদলী সরকারি বিষয়, সড়ক অবরোধ করে মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি দুঃখজনক।
লাকসাম থানা পুলিশের ওসি নাজনীন সুলতানা বলেন, সড়ক অবরোধের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেনি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মিলন চাকমা বলেন, সড়ক অবরোধের স্থলে এসে অবরোধকারীদের কে প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় সড়ক সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
কুমিল্লা জেলা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও লাকসাম সার্কেল অফিসার মোঃ শোমেন মজুমদার বলেন, আমি লাকসাম থানার ওসির মাধ্যমে জেনেছি। সড়ক অবরোধ করে সরকারি কর্মকর্তার বদলী আটকানো যায় না। তবে যারা আন্দোলন করেছে যথাযত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, বিষয়টি আমি এ মাত্র জেনেছি। তবে যারা এ আন্দোলন করেছে তাদের বুঝা উচিত ছিল যে সড়ক অবরোধে যান চলাচল ব্যাহত হলে জন ভোগান্তি সৃষ্টি হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসানের মুঠোফোনে একাধিক বার কল ফোন করেও বক্তব্য নেয়া যায়নি।