
শরিয়তুল্যাহ্ মাষ্টার তিস্তাসেতু নামকরণ’র দাবীতে মানববন্ধন
আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ-কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সংযোগে নির্মিত তিস্তাসেতুকে ‘শিরয়তুল্যাহ্ মাষ্টার তিস্তাসেতু’ নামকরণের দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত।
রবিবার (২০ জুলাই) দুপুরে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থা’র (গানাসাস) সামনে শহরের প্রধান সড়কে অবিলম্বে এ দাবী বাস্তবায়নে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে অন্তরবর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন- শরিয়তুল্যাহ্ মাষ্টার তিস্তাসেতু নামকরণ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শামীম মন্ডল, সদস্য সচিব শাহিন মিয়া, ডা. ফুয়াদ ইসলাম, শিক্ষক শরিফুল ইসলাম, শিক্ষার্থী রত্মা আক্তার, জিল্লুর রহমান, আঃ হালিম, আঃ হাকিম প্রমূখ।
‘বাংলাদেশ শিক্ষা পর্যবেক্ষক সোসাইটি’র চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এম শরিফুল ইসলাম এতে অংশগ্রহণ পূর্বক একাত্মতা ঘোষণা করেন।
তিস্তাসেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক আ. ব. ম. শরিয়তুল্যাহ্ মাষ্টারের প্রতি সুন্দরগঞ্জ তথা গাইবান্ধাবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নব-নির্মিত হরিপুর-চিলমারী তিস্তাসেতুর নাম ‘শরিয়তুল্যাহ্ মাষ্টার তিস্তাসেতু’ ষোষণার দাবী জানান।
এনিয়ে কথা হলে আ.ব.ম শরিয়তুল্যাহ্ মাষ্টার বলেন- ‘১৯৯৫ইং সালে যখন একাকীই তিস্তাসেতু নির্মাণের দাবী তুলে ধরে লিফলেট প্রদানসহ নানাভাবে সংগ্রাম চালাতে থাকি; তখন থেকে দীর্ঘ ৩০ বছর অনেকেই টিটকারী, তিরস্কার করত। তবুও থেমে থাকিনি। কারণ- প্রেসিডেন্ট নাসের যদি থেমে যেতেন তবে মিশরের মানুষ আজও সেই ভয়াল দুঃখ-কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পেতোনা’।
আমাদের এ প্রতিবেদক (আবু বক্কর সিদ্দিক, সভাপতি, প্রেসক্লাব-সুন্দরগঞ্জ) কে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন-একজন নির্ভীক গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আপনি প্রথমে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করেছেন, এখনো করছেন।
তারপর অনেকেই নিজ নিজ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে আমাকে উৎসাহিত করায় গণমাধ্যমের নিকট আমি কৃতজ্ঞ।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
শিডিউল মোতাবেক অর্থ ছাড় দেয়ার পর ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়।
১৪৯০ মিটার দীর্ঘ তিস্তাসেতু, শহরমোড় নামক স্থানে তিস্তার শাখানদীর উপর আরো ৯৬ মিটার দীর্ঘ হাতিরঝিলের ন্যায় একটি আর্চব্রীজসহ ৮০ কিলোমিটার অতিরিক্ত সড়ক উন্নয়ন, সংশ্লিষ্ট মাটির কাজ, জমি অধিঃগ্রহণসহ সস্পূরক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯’শ ২৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে দাতা সংস্থা-সৌদী ফাণ্ড ফর ডেভেলপমেন্ট’র (এসএফডি) প্রদেয় ৬৩২ কোটি ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ২৯৩ কোটি।
দাতা সংস্থা এসএফডি’র কনসালট্যান্ট হিসেবে নিযোজিত রয়েছেন-এলজিইডি’র সাবেক প্রকল্প পরিচালক/চীফ ইঞ্জিনিয়ার শহিদুর রহমান প্রামাণিক। প্রকল্পটি নির্মাণে কাজ করছে ‘চায়না ষ্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর’র (এলজিইডি’র) তত্বাবধানে প্রথমবারের মতো এটিই প্রথম বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলো ২ দফা পিছিয়ে চলতি বছেরের আসন্ন ২ আগষ্ট সম্পূরক প্রকল্পটি চলাচলের জন্য উম্মুক্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ ‘তিস্তাসেতু প্রকল্প নিয়ে সংশয়, দেবে গেছে স্প্যান’ -শীর্ষক শিরোনামে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর সংবাদ প্রকাশিত হয়।
৯৬ মিটারের ব্রিজের (আর্চব্রিজের) স্প্যান দেবে যাওয়াসহ সম্পূরক প্রকল্পের দূর্নীতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে দুর্নীতির লাঘব হয় ও নির্মাণকাজের গতি বৃদ্ধি পায়।
এতে ৯৬ মিটার আর্চব্রীজের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার (চট্রগ্রামের নিপা এন্টারপ্রাইজ) গাঁ ঢাকা দেন।
তৎকালীণ নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম নাটোরের সিংরা উপজেলায় বিপুল পরিমাণ টাকাসহ আটক হন। উপজেলা প্রকৌশলীকে বদলী করা হয় অন্যত্রে।
২০২৩ সালের জুন মাসে চলাচলের জন্য ব্রিজটি খুলে দেয়ার সময়সীমা অতিক্রমের কারণসহ নানাদিক উল্লেখ করা হয় ঐ প্রতিবেদনে।
https://www.sangbadtoday.com/%e0%a6%9d%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9f%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a7%9c/