তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুরঃ
দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা কেরোয়া ইউনিয়নের মালিবাড়ি থেকে এম রহমানিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ও বালিকা বিদ্যালয় রাস্তার ব্রিজ। ফলে যাতায়াতে দুর্ভোগের অন্ত ছিল না যাত্রীদের।
এছাড়া গত মাসে রায়পুর-পানপাড়া প্রায় ৭ কিলোমিটার বেহাল সড়কের বড় বড় গর্তগুলোও ভরাট করে দিয়েছেন।
সোমবার দুপুরে (৭ জুলাই) নিজ উদ্যোগে ব্রিজটি সংস্কার করেছেন একই ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবেক ছাত্র নেতা মোঃ শাহআলম।
তিনি কেরোয়া ইউনিয়ন সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি। তার এমন ব্যক্তিগত উদ্যোগে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই ব্রিজ এবং পানপাড়া সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন। দুই উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক ও ব্রিজ।
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি জানালেও কেউই তা আমলে নেয়নি। তাই বছরের পর বছর এই সড়ক ও ব্রিজ বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। সোমবার বৃষ্টির মধ্য গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ইটের কংকর দিয়ে সড়ক ও ব্রিজের সংস্কার করে দেন শাহ আলম।
যাতায়াতকারীরা বলছেন, অস্থায়ী হলেও এখন এই ব্রিজ দিয়ে চলাচলে মানুষের ভোগান্তি কম পোহাতে হবে। আরিফ হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ব্যক্তি উদ্যোগে সড়ক ও ব্রিজ সংস্কারের মতো এমন একটি কাজ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। গত এক যুগ ধরে এর অবস্থা একেবারে নাজেহাল।
এলাকাবাসীর উদ্যোগে বেশ কয়েকবার অল্প অল্প করে সংস্কার করা হলেও কয়েকদিন ধরে এটার ওপর দিয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দায়িত্বশীলদের অসংখ্যবার সংস্কারের জন্য বলা হলেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি।
এটা সংস্কার করলে বড় বড় গাড়ির কারণে নষ্ট হয়ে যায়। নিজ উদ্যোগে সড়ক ও ব্রিজ সংস্কারের বিষয়ে ছাত্র নেতা শাহআলম বলেন, সড়ক ও ব্রিজটি সংস্কার করার কিছু দিন আগে আমি আমার বাচ্চাসহ সেখান দিয়ে যাচ্ছিলাম।
এ সময় ব্রিজের ওপর দুর্ঘটনার শিকার হতে যাচ্ছিলাম। আল্লাহর রহমতে কোনোরকমে রক্ষা পেয়েছি। অনেকেই প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ছোট ছোট গাড়িগুলোর চাকা ফাঁকে আটকে যায়। ফলে যাত্রী ও চালক উভয়েই মহা বিপদে পড়েন। দীর্ঘদিন থেকেই এই সমস্যা। তাই আমি নিজ উদ্যোগে এর সংস্কার করেছি।
তাছাড়া কেরোয়া গ্রামে আমার অনেক আত্মীয়স্বজন আছেন। আর আমি নিজেও এই পথে নিয়মিত যাতায়াত করি।
ব্রিজ সংস্কার করতে কতো টাকা খরচ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তা আমি বলতে চাই না। কারণ, আমি এটা মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে ও একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করেছি। এখানে সংস্কার করতে কতো টাকা খরচ হয়েছে তা আমি মানুষকে জানাতে চাই না। আখেরাতে মহান আল্লাহ আমাকে এর প্রতিদান দেবেন।
কেরোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিনুর বেগম বলেন, যিনি সংস্কার করেছেন তিনি আমাকে বিষয়টি আগেই জানিয়েছেন। এই সড়ক ও ব্রিজটির দীর্ঘদিন ধরেই শোচনীয় অবস্থা। বেশ কয়েকবার সংস্কার হলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। কারণ, সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হতো দুই-চার-পাঁচ লাখ টাকা। যা দিয়ে ভালো মানের সংস্কার হয়নি।
তাছাড়া এর ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। বড় বড় ট্রাক চলাচল করে।
এজন্য তাড়াতাড়ি অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। পরিপূর্ণ সংস্কারের জন্য এলজিইডি প্রকল্প থেকে বরাদ্দ হযবে। বৃষ্টি কমলেই কাজ শুরু হবে। আশা করি তখন আর সমস্যা হবে না।
https://www.sangbadtoday.com/%e0%a6%86%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8b-%e0%a6%aa%e0%a6%a5%e0%a7%87/