
নাঙ্গলকোটে পাওনা টাকার জন্য কিশোরকে
গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন
নাঙ্গলকোট প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে কাজের পাওনা টাকা চাওয়ায় ইমন (১৪) নামের এক কিশোরকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও মাথার চুল কেটে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের প্রবাসী লিটনের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১০ জুন, উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের নারায়নবাতুয়া গ্রামে। অভিযুক্ত সৌদি প্রবাসী লিটন সৌদি আরব চলে গেছেন। কিন্তু তাঁর সহযোগীরা বর্তমানে এলাকায় থেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দুমকি দিচ্ছেন ভুক্তভোগী পরিবারকে।
ইমনের পরিবার জানিয়েছে, অভাবের কারণে প্রথম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে পড়াশোনা ছাড়ে ইমন। এরপর স্থানীয়ভাবে দিনমজুরের কাজ শুরু করে। বেশ কিছুদিন ধরে একই গ্রামের প্রবাসী লিটনের বাড়িতে কাজ করছিল সে।
সব মিলিয়ে লিটনের কাছ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা পাওনা ছিল ইমনের। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ টাকা দিলেও বাকি টাকা দিতে দীর্ঘদিন ঘোরান লিটন।
গত ১০ জুন দুপুরে স্থানীয় একটি দোকানে ইমন ও লিটনের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর লিটনের নির্দেশে তাঁর লোকজন ইমনকে মারধর করে ধরে নিয়ে যায় লিটনের বাড়িতে। সেখানে গাছের সঙ্গে বেঁধে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয় এবং মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়।
পরিবারের দাবি, ইমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে একটি সিএনজিযোগে তাঁকে পাশ্ববর্তী জেলার সেনবাগ উপজেলার এক জায়গায় ফেলে আসে লিটনের লোকজন। সেখান থেকে ইমনের মা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
ইমনের মা তাছলিমা বেগম বলেন, পরিবারের অভাব দেখে ছেলে কাজ করে সংসার চালাতে চেয়েছিল। সেই ছেলেকে এভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। আমি স্থানীয়ভাবে বিচার চেয়েছি, কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছি। মাননীয় আদালত মামলাটি থানায়তন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন। মামলার খবর শুনে লিটন গোপনে প্রবাসে চলে যায়।
মামলাটি তদন্ত করছেন এসআই সমর বড়ুয়া। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত লিটনের বাবার মফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার দিন আমার ছেলে বাড়িতে ছিল না। এ পরিবারটি মিথ্যা কথা বলেছ । আর এ ছেলে খারাপ তাই আমাদের সমাজের লোকজন এ ছেলেকে সমাজের বাহির করে দিয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রবাসী লিটনের প্রভাবের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে বুধবার (৯ জুলাই) নাঙ্গলকোট থানার ওসি একেএম ফজলুল হক বলেন, মামলাটি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।